সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শুধুই কি কমেডিয়ান....!- অয়নদীপ দেবনাথ



আজ এমন এক বর্ণময় চরিত্রের জন্মদিন যাঁর কথা এই একটা লেখাতে হয়তো শেষ করা যাবে না।

 

মনে পড়ে সেই কেদারের কথা?

মনে পড়ে ওই বিখ্যাত ডায়ালগ,'মাসিমা মালপো খামু!'

 

তারপর সেই যে,'হামহাম গুড়ি গুড়ি নাচ!'

 

হ্যাঁ, এগুলো শুনলেই অনেকেই আমাদের ছোটবেলাতে ফিরে যায়।

ছুটির দিনে দুপুরে টিভির পর্দায় এসব সিনেমা।

 

কৌতুক অভিনেতা ভানু বন্দোপাধ্যায়!

কথাটা একটু ভুল হয়ে গেলো মনে হয়, কথাটা হবে বিখ্যাত অভিনেতা ভানু বন্দোপাধ্যায়।

আর কৌতুক অভিনয় ছিল তাঁর বর্ণময় চরিত্রের একটা অংশ।হ্যাঁ আজ সেই কেদারের জন্মদিন, যে মালপো খেতে বড্ডো ভালোবাসে!

 

বর্ণময় বলছি,তার কারণ,

ভানু বন্দোপাধ্যায় শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না,তিনি ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী।

প্রথম জীবনে তিনি ঢাকার অনুশীলন সমিতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

 

আবার ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর প্রিয় ছাত্র।

হ্যাঁ প্রিয় ছাত্র, যে কিনা সত্যেন্দ্রনাথ বসুর স্ত্রী উষাবতী দেবীকে অবলীলায় বলে দিতে পারে,'মাসীমা মালপো খামু,আসে নাকি দুই'খান!'

আর সেই কথা শুনে হেসে খুন পদার্থবিজ্ঞানী!

আর এসবের সাক্ষী স্বয়ং উত্তম কুমারের ভাই তরুণ কুমার নিজে।

 

স্টারডমের কোন শীর্ষে থাকলে নিজের নামে সিনেমা হয় বলতে পারেন??

'ভানু পেলো লটারি','ভানু গোয়েন্দা, জহর অ্যাসিস্টেন্ট'

আর কোনো অভিনেতার নিজের নামে কোনো সিনেমা রিলিজ হয়েছে কিনা এই মূহুর্তে মনে পড়ছে না!

 

তারপর ধরুন মিস প্রিয়ম্বদা!

কি অসাধারণ অভিনয়।

আর কতো নাম বলবো, তার ঝুলিতে যে তিনশোর ওপর সিনেমা।

 

বাস্তব জীবনেও ছিলেন রসিক মানুষ, সোজা কথাতে উত্তর দিতেন না কখনোই।

 

একবার ভানু বন্দোপাধ্যায়ের মেয়ে তাঁকে বলেছিল,'বাবা আমার বন্ধু জিজ্ঞেস করেছিলো তুমি বাড়িতেও আমাদের সবসময় হাসাও কিনা!'

 

উত্তর ছিল,'তোমার বন্ধুর বাবা তো ডাক্তার, তা উনি কি বাড়িতে সবসময় ছুড়ি কাঁচি নিয়ে তোমার বন্ধুদের তাড়া করে?'

 

এরকমই মজার মানুষ ছিলেন ভানু বন্দোপাধ্যায়।

 

আবার, কোন এক জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলেন,'আচ্ছা ভানু বাবু,আপনি কি বামপন্থী?'

 

উত্তর ছিল,'আমার নামের মধ্যেই এর উত্তর লুকিয়ে আছে!'

 

শুভ জন্মদিন সাম্যময় বন্দোপাধ্যায়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ঝড়ের আড়ালে- দোলা সাহা

  অসহায় স্তব্ধতায় বুক দুরু দুরু; ক্ষনিক আশা যাহা ছিল মনে, ভাঙিল তা প্রবল করাঘাতে। বেদনার গ্লানি, আর শোকাতুর মন বাধিল ক্ষনিক আশা একটু স্নেহের পরশ জরাহীন ভারতবর্ষ মুক্ত করো সবে হারিয়ে যেতে দেবনা আমরা গভীর অন্ধকারে শত শত ক্ষত ভরিয়ে তুলব- গভীর মমতায় ভরা স্নেহের প্রলেপে।

অন্য পুজো - পিনাক

  ১ অনেকদিন ধরেই ছেলেটা বায়না ধরেছে এবার পূজোয় একটা নতুন জিন্সের প্যান্টের জন্য। বছরদুয়েক আগে ওর বাবা অন্ধ্রে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে গিয়েছিলো, তারপর থেকে আর ফেরেনি। এখনো পর্যন্ত তার কোনো খোঁজখবরও পাইনি সে।পাঁচবাড়ি দুইবেলা কাজ করে কোনোমতে সংসারটা টেনেটুনে চলে যায় আর মিডডে মিলের দয়ায় ছেলের একবেলা পেটটা কোনোরকমে ভরে যায় রোজ। অনেক ইতস্তত করে আজ বড়বাড়ির বৌ এর কাছে পাঁচশ টাকা চেয়েই বসেছিল ফুলমনি ছেলের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। অনেকদিনের বিশ্বস্ত লোক, দু'বছরে একদিনও কামাই করেনি:বড়বাড়ির বৌ তাই টাকার কথাতে একবারের বেশী দুবার ভাবেনি।  আজ বিকেলে মনটা বেশ খুশি ছিল ফুলমনির। টুসিদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাড়ি না ফিরে সোজা চলে গিয়েছিল বড়রাস্তার ধারে কাঁচের দরজা দেওয়া জামাকাপড়ের দোকানটার দিকে। রাস্তায় গাড়ি বেশী ছিলো না তখন; দোনোমোনো করে রাস্তাটা পেরোতে গিয়েছিল সে। বকুলতলার দিক থেকে বিকট শব্দ করে হঠাৎ একটা গাড়ি চলে আসে দানবের মতো! তারপর... মায়ের ডাকে ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে যায় পল্লবের! ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে সে বিছানায়... ২ ৩৪ নং জাতীয় সড়ক ধরে শ্যমলকে বাইক চালিয়ে রোজই ফিরতে হয় অফিস থেকে। আজ অফিস থেকে বেড়িয়ে অফিসের ...

পচন- মনোজ কুমার সরকার

  আজ যে কাহিনীর অবতারণা করতে চলেছি পাঠকের কাছে তা নিছক একটি গল্প হলেও আসলে আমার জীবনেই এই বিচিত্র ঘটনাটি ঘটেছিল। অন্তত সেদিন একবিংশ শতাব্দীর যুক্তিবাদী শিক্ষিত মানুষ হওয়া সত্বেও আমি এই ঘটনার জটিল রহস্যের কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনি। সেই বিচিত্র ঘটনার দর্শকের ভূমিকা নেওয়া ছাড়া সেদিন আমার আর কিছুই করার ছিল না। বছর দশেক আগের কথা। সেবার গ্রীষ্মের ছুটিতে গেলাম মামার বাড়ি বেড়াতে ।মা, বাবা, ভাই ও আমি অর্থাৎ সপরিবারে ।আমার মামাবাড়ী রানাঘাটে কাপাস ক্যাম্পের কাছাকাছি হরিনাথপুরে। হরিনাথপুর একটি ছোট কলোনি বিশেষ ।দেশভাগের পর বহু ছিন্নমূল মানুষ সেখানে পাকাপাকি তাদের বসতি স্থাপন করেছিল। দিদিমা প্রায়ই বলতেন এখানে আগে ছিল শুধুই জল কচুর বন আর আঁশ শেওড়ার ঝোপ। এমনকি আমি নিজেও ওই অঞ্চলে গিয়ে বেশ কিছু পরিত্যক্ত জলা জমি দেখেছি। প্রোমোটারের নেক নজরে পড়লে সেখানে হয়তো ফ্ল্যাটবাড়ি উঠতে পারত। এমনিতে হরিনাথপুর জায়গাটা আমার ভীষণ প্রিয়। আমরা কলকাতার মানুষ। গ্রামবাংলায় আসি একটু টাটকা বাতাসের খোঁজে, আর হরিনাথপুরে সেসব অফুরন্ত। এমন একটি চমৎকার জায়গায় এসে এত ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হবে যদি আগে জানতাম তাহলে সে...