বীথিকার সকাল থেকে শরীরটা ভীষণ ম্যাজ ম্যাজ করছে। মনটাও ভালো নেই। সকাল থেকে সে কী করবে ভেবে পাচ্ছে না। রোজনামচার গান করা আর লেখাপড়া ছাড়া তার জীবনে কীবা করার আছে । বন্ধু উজান ও আজ তার বাড়িতে আসেনি। সে শহর ছেড়েছে আজ প্রায় দেড় মাস হল। কাজের আশায় সে শহরে শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেরকম করেই হোক একটা চাকরি করতেই হবে । দিনে দুবার ওই চার দেওয়ালের যন্ত্রতে শুধুমাত্র কথা হয় । বীথিকা এসব ভাবছে আর মনটা খারাপ হচ্ছে। কাছে থাকার অনুভূতি টা বীথিকা জানতো। দূরে থাকার অনুভূতিটা হয়তো বীথিকার বোঝার বাইরে । এইসব ভাবতে ভাবতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশ এর দিকে চোখ তুলল । যে প্রকান্ড গাছটা মাথা আকাশের দিকে উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সেই গাছের ফাঁকে ফাঁকে হলুদ হলুদ কিছু ফুল ফুটে আছে বীথিকা দেখলো । না ভুলে যায় নি বীথিকাকে । বীথিকার জন্য সব কটা গালে নিজেকে মেলে ধরেছে। বীথিকার ঠোঁটে হালকা করে প্রস্ফুটিত হল একটি হাসি। ঘরের মধ্যে থেকে ক্রিং ক্রিং শব্দ ভাসছে শুনে ভেতরে চলে গেল। হাতে তুলেই দেখতে পেল স্ক্রিনে উজান এর নাম । বীথিকা ফোন তুলতেই উজান বলল চাকরিটা আমার হয়ে গেছে বুঝলে ।বীথিকা ফোনটা হাতের মধ্যেই নামিয়ে রেখে সোজা চলে গেল একেবারে ফুল গাছটার কাছে । আনন্দে হাসি ফুটে উঠল তার মুখে । গাছটার কাছে গিয়ে গাছটাকে জড়িয়ে ধরে গান করতে লাগলো জোরে । হঠাৎ করেই একটা স্বর্ণচাঁপা ফুল মাথায় পড়তেই বীথিকা বলে উঠলো ভালোবাসি। উজান বুঝতে পেরেছিল বীথিকার অনুভব তাই সেও বললো ভালোবাসি। দুজনে একে অপরের কথা না শুনলেও তাদের ভালোবাসার অনুভূতিটা যে রয়েছে সেটা দুদিক থেকেই স্পষ্ট।

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন