সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বীথিকাজান- চিত্রলেখা চক্রবর্তী

 


বীথিকার সকাল থেকে শরীরটা ভীষণ ম্যাজ ম্যাজ করছে। মনটাও ভালো নেই। সকাল থেকে সে কী করবে ভেবে পাচ্ছে না। রোজনামচার গান করা আর লেখাপড়া ছাড়া তার জীবনে কীবা করার আছে । বন্ধু উজান ও আজ তার বাড়িতে আসেনি। সে শহর ছেড়েছে আজ প্রায় দেড় মাস হল। কাজের আশায় সে শহরে শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেরকম করেই হোক একটা চাকরি করতেই হবে । দিনে দুবার ওই চার দেওয়ালের যন্ত্রতে শুধুমাত্র কথা হয় । বীথিকা  এসব ভাবছে আর মনটা খারাপ হচ্ছে। কাছে থাকার অনুভূতি টা বীথিকা জানতো। দূরে থাকার অনুভূতিটা হয়তো বীথিকার বোঝার বাইরে । এইসব ভাবতে ভাবতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশ এর দিকে চোখ তুলল । যে প্রকান্ড গাছটা মাথা আকাশের দিকে উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে  সেই গাছের ফাঁকে ফাঁকে হলুদ হলুদ কিছু ফুল ফুটে আছে বীথিকা  দেখলো । না ভুলে যায় নি বীথিকাকে । বীথিকার জন্য সব কটা গালে নিজেকে মেলে ধরেছে। বীথিকার ঠোঁটে হালকা করে প্রস্ফুটিত হল একটি হাসি। ঘরের মধ্যে থেকে ক্রিং ক্রিং শব্দ ভাসছে শুনে ভেতরে চলে গেল। হাতে তুলেই দেখতে পেল স্ক্রিনে উজান এর নাম । বীথিকা ফোন তুলতেই উজান বলল চাকরিটা আমার হয়ে গেছে বুঝলে ।বীথিকা ফোনটা হাতের মধ্যেই নামিয়ে রেখে সোজা চলে গেল একেবারে ফুল গাছটার কাছে । আনন্দে হাসি ফুটে উঠল তার মুখে । গাছটার কাছে গিয়ে গাছটাকে জড়িয়ে ধরে গান করতে লাগলো  জোরে । হঠাৎ করেই একটা স্বর্ণচাঁপা ফুল মাথায় পড়তেই বীথিকা বলে উঠলো ভালোবাসি। উজান বুঝতে পেরেছিল বীথিকার অনুভব তাই সেও বললো ভালোবাসি। দুজনে একে অপরের কথা না শুনলেও তাদের ভালোবাসার অনুভূতিটা  যে রয়েছে সেটা দুদিক থেকেই স্পষ্ট।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ঝড়ের আড়ালে- দোলা সাহা

  অসহায় স্তব্ধতায় বুক দুরু দুরু; ক্ষনিক আশা যাহা ছিল মনে, ভাঙিল তা প্রবল করাঘাতে। বেদনার গ্লানি, আর শোকাতুর মন বাধিল ক্ষনিক আশা একটু স্নেহের পরশ জরাহীন ভারতবর্ষ মুক্ত করো সবে হারিয়ে যেতে দেবনা আমরা গভীর অন্ধকারে শত শত ক্ষত ভরিয়ে তুলব- গভীর মমতায় ভরা স্নেহের প্রলেপে।

অন্য পুজো - পিনাক

  ১ অনেকদিন ধরেই ছেলেটা বায়না ধরেছে এবার পূজোয় একটা নতুন জিন্সের প্যান্টের জন্য। বছরদুয়েক আগে ওর বাবা অন্ধ্রে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে গিয়েছিলো, তারপর থেকে আর ফেরেনি। এখনো পর্যন্ত তার কোনো খোঁজখবরও পাইনি সে।পাঁচবাড়ি দুইবেলা কাজ করে কোনোমতে সংসারটা টেনেটুনে চলে যায় আর মিডডে মিলের দয়ায় ছেলের একবেলা পেটটা কোনোরকমে ভরে যায় রোজ। অনেক ইতস্তত করে আজ বড়বাড়ির বৌ এর কাছে পাঁচশ টাকা চেয়েই বসেছিল ফুলমনি ছেলের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। অনেকদিনের বিশ্বস্ত লোক, দু'বছরে একদিনও কামাই করেনি:বড়বাড়ির বৌ তাই টাকার কথাতে একবারের বেশী দুবার ভাবেনি।  আজ বিকেলে মনটা বেশ খুশি ছিল ফুলমনির। টুসিদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাড়ি না ফিরে সোজা চলে গিয়েছিল বড়রাস্তার ধারে কাঁচের দরজা দেওয়া জামাকাপড়ের দোকানটার দিকে। রাস্তায় গাড়ি বেশী ছিলো না তখন; দোনোমোনো করে রাস্তাটা পেরোতে গিয়েছিল সে। বকুলতলার দিক থেকে বিকট শব্দ করে হঠাৎ একটা গাড়ি চলে আসে দানবের মতো! তারপর... মায়ের ডাকে ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে যায় পল্লবের! ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে সে বিছানায়... ২ ৩৪ নং জাতীয় সড়ক ধরে শ্যমলকে বাইক চালিয়ে রোজই ফিরতে হয় অফিস থেকে। আজ অফিস থেকে বেড়িয়ে অফিসের ...

পচন- মনোজ কুমার সরকার

  আজ যে কাহিনীর অবতারণা করতে চলেছি পাঠকের কাছে তা নিছক একটি গল্প হলেও আসলে আমার জীবনেই এই বিচিত্র ঘটনাটি ঘটেছিল। অন্তত সেদিন একবিংশ শতাব্দীর যুক্তিবাদী শিক্ষিত মানুষ হওয়া সত্বেও আমি এই ঘটনার জটিল রহস্যের কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনি। সেই বিচিত্র ঘটনার দর্শকের ভূমিকা নেওয়া ছাড়া সেদিন আমার আর কিছুই করার ছিল না। বছর দশেক আগের কথা। সেবার গ্রীষ্মের ছুটিতে গেলাম মামার বাড়ি বেড়াতে ।মা, বাবা, ভাই ও আমি অর্থাৎ সপরিবারে ।আমার মামাবাড়ী রানাঘাটে কাপাস ক্যাম্পের কাছাকাছি হরিনাথপুরে। হরিনাথপুর একটি ছোট কলোনি বিশেষ ।দেশভাগের পর বহু ছিন্নমূল মানুষ সেখানে পাকাপাকি তাদের বসতি স্থাপন করেছিল। দিদিমা প্রায়ই বলতেন এখানে আগে ছিল শুধুই জল কচুর বন আর আঁশ শেওড়ার ঝোপ। এমনকি আমি নিজেও ওই অঞ্চলে গিয়ে বেশ কিছু পরিত্যক্ত জলা জমি দেখেছি। প্রোমোটারের নেক নজরে পড়লে সেখানে হয়তো ফ্ল্যাটবাড়ি উঠতে পারত। এমনিতে হরিনাথপুর জায়গাটা আমার ভীষণ প্রিয়। আমরা কলকাতার মানুষ। গ্রামবাংলায় আসি একটু টাটকা বাতাসের খোঁজে, আর হরিনাথপুরে সেসব অফুরন্ত। এমন একটি চমৎকার জায়গায় এসে এত ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হবে যদি আগে জানতাম তাহলে সে...