সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

স্পর্শ- শ্রীদত্তা সেন

  আর তারপর? -তার আর কোনো পর নেই। ওখানেই শেষ।  ভীষণরকম লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পরে যখন আজকাল একটু জিরোতে যায় তখনই মৃদুলার নানান মানসিক যন্ত্রণা, চিন্তা ছেঁকে ধরে। যথোপযুক্ত আরাম আর নেওয়া হয়না। প্যাচপ্যাচে গরমে ঘেমে নেয়ে এসে গা ধুয়ে বসার সময়েই তার মনের মাঝে একটাই কথা ঘুরে ফিরে আসে। "বয়স হচ্ছে। কিছু করতে হবে। কিছু করতেই হবে। আর কতদিন বুড়ো বাপের ওপর বোঝা হয়ে থাকবো?" আসলে কথাটা ওর নয়। ওর মনের মাঝে কেউ বা কারা রোপন করেছে।  শুরুটা এমন কিন্তু ছিলো না। বেশ মধুর ছিলো। সবকিছুই ঘেঁটে দিলো বর্তমান পরিস্থিতি। অভূতপূর্ব এক ক্ষতির পরে মন, শরীর সব গোছাতে ব্যস্ত থাকায় আজকাল আর শিশির মাখা চিকন ঘাস, কুয়াশাকে দেখতে পায়না। বা বলা চলে দেখতে চায়না। কঠোর বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এসব আর মানায়না।  এসবই হাবিজাবি লেখা ছিলো ওর ডায়েরিতে। কিন্তু দুঃখের সাথে বলার সেই ডায়েরিটাও আজ নেই। পাতা আছে। কিন্তু সব খালি। আজকাল নাকি ওর শূন্যতার মধ্যের লেখা, কথাকে বেশি আঁকড়ে ধরছে।  আসলে এইটা একটা ব্যাধি। আর তার শিকারও হয় অনেকেই। নিজেকে একদম ছোট্ট চিলেকোঠার ঘরে বন্দী রেখেছে। ভেঙে যাওয়ার পরে উঠতে গেলে নিজের সবকিছ...

আগমনী- বন্যা ব্যানার্জী

  শরৎ মুখো রোদের গায়ে মেঘের লাইন।দেখতে দেখতে হঠাৎ ছাদের ওড়না নীলে দু চোখ ধূলো,কেমন যেন এলোমেলো। বাতাস ঝিরি গাইছে পাখি,বয়েস এখন লুকোয় ভীড়ে। তবুও আজ ওড়না নীলে রাত জাগা সেই স্বপ্ন গুলো নম্র হলো,নম্র হলো কলম ছুঁলো ভোরের চিঠি।প্রিয়তমা!আজকে আমার আড়মোড়া দিন অফিস ছুটি। জানি সবই,তবুও কেনআজ কে হঠাৎ পাইয়ে দিচ্ছে ভোরের হাওয়ায় খুব চেনা সুখ। খুব চেনা সুখ শহর ছাড়া,তবুও কেন জড়িয়ে থাকা আঙুল ছুঁয়ে হাঁটছে খেয়াল মেঘের গায়ে।শরৎ মুখো রোদের মায়ায় একুশ বছর আগের দেখা তোমার ই মুখ।।

বিতানের মা- চিত্রলেখা চক্রবর্তী

  শুনুন আমার ছেলে বিতান ।  প্রফেসারী  করে দিল্লীর আই আই টি তে । ওর চাকরী করার শখ কোনোদিনই ছিল না । সব সময় আমাদের কে বলতো গবেষণা করবে ।  তাই  প্রফেসারী করে আর নিজের গবেষণার দেখভাল নিজেই করে । মা হিসেবে  ওর খাওয়া দাওয়া যত্নাত্তির  টুকুতে ‌কোনো ত্রুটি রাখিনি ।  ।  সবসময় ওর সাথে বন্ধুর মতো মিশেছি । ওকে বোঝার চেষ্টা করেছি ।  এটা আমার কর্তব্য বন্ধুর মতো বাচ্চাদের সঙ্গে মেশা ।তাই আমাদের মা বেটার সম্পর্কটা বেশ জমকালো । হুম পড়াশোনাটা ওর বাবা দেখে । আমি পড়াশোনাতে ভালো ছিলাম না । যদিও ভূগোলে স্কুলে সর্বোচ্চ নাম্বার টা আমি পেতাম । ওই আঁকতাম প্রচুর । ক্লাস এগারো   বাবা দেখলো ছেলে । সুপাত্তর পেয়ে গেল । ঘটা করে দিল বিয়ে । বিয়ের পর স্কুল ছেড়ে দিলাম ।যদিও আমার উনি বলেছেন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে।  ভালোবাসা , ভালো থাকার একটুও কমতি নেই ।   হল একবছরের মধ্যে বিতান । এই টি আমার একটাই মানিক্য । সব শুধু এই আমার পুত্তুর কে ঘিরে । সু পুত্তুর ও তত্তর করে বেড়ে উঠলো । আমার ও বয়স বাড়তে লাগলো । তবে স্কুল ছেড়েছি সে তো হলো । কিন্তু ওই...

জাগবি কবে- বিশ্বজিৎ দত্ত

  ঘুম কি তোর ভাঙবে নারে, সত্যি কি আর জাগবি না? জলের স্রোতে ভাঙছে যে পাড়, নয়ন খুলে দেখবি না?? নীরব রলি, মূল্যবোধে, নদীর বান ঐ হাকে চেতনা তোর গভীর শোকে, মুখোশে যে মুখ ঢাকে! হায়রে দেশে, মানুষ বেশে, এই বুঝি তোর আত্মরূপ । কাল যা ছিল, আজ হারালি! তোর জীবনের স্বপ্ন সুখ। মগ্ন রলি আত্মসুখে, পরের কথা ভাবলি না। মানবতার পথের পরে- পা দুখানা, রাখলিনা! আছিস বেশ! ঘুমের ঘোরে, নিশি যাপন, আপন চড়ে। অবাক নয়ন, অন্ধ জ্যোতি, শমন যে তোর রুদ্ধ দ্বারে! ভাঙছে পাড়, ভাঙছে বুক, তবু ঘুম ভাঙছে না! সত্যি আর জাগবি কবে? সত্যি কি আর জাগবি না!!

এবং তারপর- রানা মিত্র

  আমি চাইবো না থেকে যেতে, বলবো না মেপে নিতে, ভালোবাসার পরিমাপ যদি হয়, তবুও তা মাপার জিনিস নয়। আমি জানি তোমার আছে, তোমারও হয়, আমার মতই মৃত্যুভয়, সময় বিশেষে মৃত্যু প্রয়োজন, মৃত্যুভয় টা জরুরি নয়। মাঝে মাঝে তাই মরি, আবার নিজেকে জুড়ি, তবু ক্ষত থেকে যায় মনে, মনে হয় ক্ষতে যদিও থাকে বিদ্বেষ ঘৃনা, লজ্জা ভয় কখনো নয়।

কালাহান্ডির মানুষখেকো- সৌরভ সাউ

  পুব দিক থেকে পরতে পরতে কালো মেঘ জমতে শুরু করেছিল। কিছুক্ষণ আগে থেকে বৃষ্টি টাও শুরু হয়ে গেল। প্রথমে ফিস ফিস করে তার পর ঝিরঝির করে। আমি যে জিরহুল গাছটায় বসে আছি সোজা আর ঝাঁকড়া বলে এখনো গায়ে বৃষ্টির ছাঁট লাগছে না। সামনে ব্যাসল্ট পাথরের স্তুপটা বৃষ্টির জলে ভিজে চকচকে হয়ে উঠেছে। এমনিতেই কালো হয় এই ব্যাসল্ট পাথর। তার ওপর আবার জল পড়ে কালো রঙ আরো ফুটে উঠেছে। চারিদিক থেকে শিলাজতুর গন্ধ উড়ছে। পাথরের স্তুপটা ফুট ত্রিশেক উঁচু হয়ে আবার সমান হয়ে গেছে উওরের দিকে। ওদিকটায় ঘন জঙ্গল। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হতে বেশি দেরি নেই। উওরের ঐ জঙ্গলের দিক থেকে চোখের পলক পরতে না পরতেই গোটা দশেক অতিকায় হাতি নেমে এলো পাথরের ঢাল বেয়ে। জল পড়ে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় একটা বাচ্ছা হাতি হাত পাঁচেক ওপর থেকে হরকে পড়ল পাথর গুলোর পায়ের কাছে। ওদিকে দেখতে গিয়েই একটা মাদি হাতির চোখ পড়ে গেল ফুট চল্লিশেক ওপরে গাছের ওপর বসা আমার দিকে। ব্যাস আর যাই কোথায় ! ওত ব...